বাণী রায় : সৃষ্টির বহুমুখীনতা
- আশীষ কুমার সাউ
আজীবন অনলস সাহিত্য-সাধনায় আত্মমগ্ন লেখিকা বাণী রায়। সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে তাঁর ছিল অনায়াস গতি। তাঁর সৃষ্টির মণি-মুক্তো ছড়িয়ে আছে সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে। তার সমকালে দিগবিদিক ব্যাপী তার জনপ্রিয়তা থাকলেও বর্তমানে তাঁর বহু সৃষ্টিই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে। তিনি নিজেও আজকের পাঠকের কাছে অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত এক ব্যক্তিত্ব। বিশ শতকের পঞ্চাশ-ষাট এর দশকে। বাণী রায় লেখনির জাদু স্পর্শে বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও মানবিক মূল্যবোধের একটু একটু করে বদলের চিত্র এঁকেছেন তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটকে। নারী মনের অন্দরমহলের নিভৃত কোনটিকে পরম মমতায় জনসমক্ষে উদ্ভাসিত করেছেন। স্বাধিকার-প্রমত্ত আজকের একুশতকের নারীকে আমরা বাণী রায়ের উপন্যাসের নায়িকা রূপে দেখতে পাই। একুশ শতকের নারীর ক্ষমতায়নের যুগে বাণী রায়ের সৃষ্টিকর্মের নবমুল্যায়নের প্রয়োজনের তাগিদেই এই বইটির প্রম্ভাবনা। বইটিতে বাণী রায়ের সমগ্র রচনার আলোচনা তথা বিশ্নেষণের প্রয়াস করা হয়েছে। তাঁর রচনার বৈশিষ্ট, রীতি-প্রকৃতি তথা মননধর্মিতাকে ছুঁতে চেয়েছেন লেখিকা।
জন্ম ১মার্চ ১৯৮৬, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত সুন্দরবনের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল পাথরপ্রতিমার এল-প্লটে। আজও আলোহীনতায় ডোবা নিঃস্তব্ধ সেই গ্রামেই পাঠশালার প্রথম পাঠ নেওয়া। পরবতীকালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয় নিয়ে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ। বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষন মন্দির থেকে বি.এড়. ও এম.এড. ডিগ্রি অর্জন। W.B.C.S.C. থেকে SET ও U.G.C. থেকে দুইবার NETT পাশ। কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ.ডি. উপাধি লাভ। গবেষণারত অবস্থায় মহিলা মহাবিদ্যালয় ও আর্য মহিলা পি.জি. কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্তি। বর্তমানে রায়দিঘী সবুজ বি.এড. কলেজে অধ্যাপনা কর্মে রত। আর্থিকও পরিবেশগত চরম প্রতিকুলতার মধ্যেও অনমনীয় দৃঢ়তা, প্রবল জেদ ও আত্মবিশ্বাস এবং ঈশ্বর ও গুরুজনের আশীর্বাদে অবিরাম পথচলা। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় অত ২০ খানা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। পড়াশুনার বাইরে কবিতা, গান, নাটক, সিনেমা ও ভ্রমণ পছন্দের বিষয়।