গোর্কির মাদার: বহুস্বরসংগতি
- ঋতম মুখোপাধ্যায়
ম্যাক্সিম গোর্কির মা/মাদার-কে শ্রমিকশ্রেণির বাইবেল” বলে সম্মানিত করেছিলেন লেনিন। ১৯০৬ সালে প্রকাশিত এই। বৃহদায়তন উপন্যাসের ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট স্মরণে রাখার মতো। ক্রমশ জারতন্ত্রের বন্ধন ছিন্ন করে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে সোভিয়েত রাশিয়া গড়ে তোলার পথে পাবেলের মা পেলাগেয়া নিলভনা যেন হয়ে উঠেছিলেন সেই বিপ্লবের ধাত্রী। বাইবেলের মতােই দেশে দেশে অনূদিত হয়েছিল ‘মা’, এমনকি নাট্যরূপান্তর এবং চলচ্চিত্রায়ণও ঘটে। বাঙালি মানসে গোর্কির ‘মা’ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বাংলা কথাসহিত্যে ‘মা’-এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। রবীন্দ্রনাথের লাবণ্যকেও আমরা ‘মা’ পড়তে দেখি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সমরেশ বসু, সোমেন চন্দ প্রমুখের কথাশিল্পে গোর্কির মা-এর বিপ্লবী সত্তা অনুপ্রেরণাস্বরূপ। এহেন যুগন্ধর অ্যাখ্যানের বহুমাত্রিক মূল্যায়ন বিভিন্ন উপবিভাগে দুই মলাটে সাজিয়ে রাখতেই বিগত দশ বছর ধরে এই সংকলন প্রস্তুত করা হয়েছে। লক্ষণীয়, ‘মা’-এর প্রকাশ-শতবর্ষে এই প্রকল্পের সূচনা এবং তার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তিও রুশ বিপ্লবের শতবর্ষে। কিছুটা ঘটনাচক্রে হলেও এই সংঘটন নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রস্তুত সংকলনে বিদগ্ধ প্রাবন্ধিক ও নবীন গবেষকদের এই বহুস্বরসংগতি গোর্কি প্রেমিক পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে, এমন প্রত্যাশা হয়তো অসংগত হবে না।