জীবনীসাহিত্য
- শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায়
জীবনচরিত রচনার ঐতিহ্য বাংলা সাহিত্যে দীর্ঘদিনের হলেও এর মূল ধারাটি ক্ষীণ। বঙ্গীয় সমালোচনার বিষয় হিসেবে জীবনীসাহিত্য চর্চিত হয়নি এখনও পর্যন্ত। অথচ অভিনব এই সাহিত্যরূপ অবলম্বন করে বিশ্বসাহিত্যে যে-সমালোচনাজগৎ গড়ে উঠেছে, তার বৈচিত্র্য ও গভীরতা লক্ষণীয়। জীবনীসাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলাপ আলোচনা যে কত মনোগ্রাহী হয়ে উঠতে পারে, এই গ্রন্থ তার প্রমাণ। জীবনচরিত-সম্পর্কিত অনুসন্ধানী ও মরমি পাঠ এই গ্রন্থটিকে করে তুলেছে। বাংলা ভাষায় এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে পথপ্রদর্শক। নিজগুণে জীবনীসাহিত্য এক চমকপ্রদ সাহিত্যরূপ। সে কি ইতিহাস, না বিজ্ঞান, না কলা? নাকি এক সংকর রচনাগোত্র ? বাংলা সাহিত্যে জীবনচরিত রচনার উৎসাহ এককালে খুব থাকলেও ক্রমশ তা ঝিমিয়ে যায়। সমালোচকরাও জীবনীসাহিত্য অবলম্বন করে কোনও প্রকার সমালোচনা ঐতিহ্য গড়ে তোলেননি বাংলা ভাষায়। অথচ বিশ্বসাহিত্যে জীবনচরিতরচনা এবং পাশাপাশি জীবনীসাহিত্যকেন্দ্রিক সমালোচনা আজও দারুণভাবে অব্যাহত। বিশ্ব ও বাংলা সাহিত্যের চরিতগ্রন্থ অবলম্বন করে বর্তমান গ্রন্থটি প্রয়াসী হয়েছে বাংলা ভাষায় সাহিত্যসমালোচনার এক নতুন ধারার সূচনা করার। এক দশকেরও অধিক সময় ব্যাপী পরিশ্রমজাত এই গ্রন্থটি বঙ্গীয় পাঠকের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছে জীবনীসাহিত্যের প্রকৃত পরিচয়, তার সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা, তার গুরুত্ব ও সমস্যা। তথ্যনিষ্ঠ, অনুসন্ধিৎসু ও নির্ভীক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন গ্রন্থটি অর্জন করেছে বাংলায় জীবনচরিতসমালোচনার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হবার বিরল সম্মান।
জন্ম : ১৯৬৭, কলকাতা।
শিক্ষা : রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়, নরেন্দ্রপুর; প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা। পেশা : কলকাতার একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা।
সাহিত্যকর্ম : ছাত্রাবস্থায় স্বাধীন সাংবাদিকতার সূচনা। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রে নিয়মিত প্রকাশিত গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ-নিবন্ধ-অনুবাদ-গ্রন্থসমালোচনা। একটি ত্রৈমাসিক সম্পাদনা করেছেন দুবছর। (১৯৯২-১৯৯৪)। কিছুদিন সাহিত্যসাংবাদিকতাসূত্রে যুক্ত ছিলেন আকাশবাণী, কলকাতা-র সঙ্গে (১৯৯৭-১৯৯৮)। ‘কৌন্তেয় গঙ্গোপাধ্যায়’ ছদ্মনামে লিখেছেন বেশ কিছু গ্রন্থসমালোচনা। একটি মাসিক সাহিত্যপত্রে নিয়মিত লিখেছেন (২০০৬-২০০৯) দেশবিদেশের সাহিত্যসংবাদ নিয়ে। একাধিক সংকলনগ্রন্থে স্থান পেয়েছে তার রচনা।