মহাকুম্ভ
- গোপাল দাস
ডুব দাও, সিক্ত কর দেহমন তা হলেই মোক্ষলাভ। কোনও যুক্তি বা তর্ক নয়, বিশ্বাস। এই বিশ্বাস কত গভীর কত বিস্তৃত হতে পারে কুম্ভমেলায় না এলে তা কখনই বোঝা যায় না। বিশ্বাসের গায়ে এটুলির মতো জড়িয়ে থাকে সংস্কার। এত নিবিড় সম্পর্ক এই দুইয়ের মধ্যে যে আলাদা করাই যায় না। আর সবকিছু মিলেমিশে মানুষের ধর্ম উন্মাদনা শেষপর্যন্ত এক বিস্ময়ে পরিণত হয়। কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ লোকের জমায়েত তেমনই এক বিস্ময়। যেখানে সেইসব মানুষদের ব্যক্তিপরিচয় মুছে গিয়ে অন্য এক পরিচয় ফুটে ওঠে। সেটা অমৃতলাভেচ্ছুক পুণ্যার্থীর পরিচয়। এখানে উচ্চনীচে ভেদ নেই। তিনতারায় ওঠা উচ্চবিত্তের সঙ্গে সমান ভাবে পুণ্যে ভাগ বসায় উন্মুক্ত আকাশের নীচে বসে থাকা মানুষগুলোও। এ যে কুম্ভ, বিশ্বাস জানান দেয় ডুব দিলেই অমৃতলাভ। কোন সে অমৃত ? মহাকুম্ভের পথে পথে অজস্র চরিত্রের সান্নিধ্যে লেখক খুঁজে বেড়িয়েছেন সেই উত্তর। আধুনিকতার উদগ্র আলো এড়িয়ে, ব্যবসার পসার বাঁচিয়ে মানুষের মাঝে খুঁজেছেন সেই অমৃতের। — পেলে? সুমনার ছোট্ট এই জিজ্ঞাসার কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। সেই খোঁজা যে চলছে আজও...।
শৈশব থেকেই নাটক আর মানুষ লেখককে আকর্ষণ করেছে। রেলওয়ের কারিগরী শাখায় কর্মরত অবস্থায় বদলির সূত্র ধরে পৌঁছে গিয়েছেন বহু জায়গায়। হৃদয়ের আকুলতা আর মানুষের টানে ঘরছাড়া হয়েছেন বারবারে। মানুষের তীর্থ ঘুরে পাওয়া মননের সেই সঞ্চয় ধরা থেকেছে তাঁর গল্পে, উপন্যাসে। নাট্যজগৎ ও সাহিত্যজগতের অবিরাম যাতায়াতে ভরে আছে তার অবসরের অবকাশ।