নারীর কলমে নারী
- জ্যোতির্ময় সেনগুপ্ত
‘নারী কলমে নারী’ নয়ের দশকে প্রকাশিত মেয়েদের লেখা কয়েকটি অসমিয়া ও বাংলা উপন্যাসে নারীত্ব নির্মাণের প্রয়াসকে বিশ্লেষণ করতে চেয়েছে। পাশ্চাত্যে এবং ভারতবর্ষে নারীবাদী আন্দোলনের নানা তরঙ্গ দেখা গেছে। সরকারি ভাবে মেয়েদের সামাজিক স্থিতি পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচীও গৃহীত হয়েছে। কিন্তু এরপর ভারতবর্ষের গ্রমীন ও নাগরিক সমাজ কতটুকু সচেতন হয়েছেন, মেয়েরাই বা নিজেদের মনের কথা বলার বা নিজস্ব পরিসর তৈরির সুযোগ কতটুকু পেয়েছেন ? উপন্যাস কল্পকাহিনী হলেও সামাজিক স্থিতি ও চাহিদার বয়ান তৈরিতে সমর্থ। আর মেয়েরাই যখন সেইসব বয়ান তৈরির মূল কারিগর, তখন প্রত্যাশার মাত্রা বেড়ে যায় বৈকি। কারণ তারাই তো আত্মপ্রকাশের আগ্রহে, আত্মপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্খায়, আত্মপরিচয় অম্বেষণের কলম ধরেছেন। দীর্ঘলালিত অচলায়তন, যা একটা সময় পরিবার তথা আধিপত্যবাদী সমাজ তৈরী করেছিল - তাকে লেখিকাদের সৃষ্ট নারীরা কখনও ভেঙে ফেলতে চেয়েছেন। আবার কখনও বা তাঁদের আকাঙ্খা নিস্ফলতায় পর্যবসিত হয়েছে। কখনও আবার নবনির্মাণের তাগিদে তাঁরা খোঁজ করেছেন নতুন প্রস্থান ভূমির। সবমিলিয়ে আলোচিত উপন্যাসগুলোতে লেখিকারা মেয়েদের কথাকল্পে খোঁজ করেছেন। মেয়েদের কথাকল্পে এই ভুবনটিকে ছুঁয়েছে ‘নারীর কলমে নারী’। মেয়েদের লেখালেখিতে ও নারীপরিসরের সন্ধানে ইকোফেমিনিজম এই গ্রন্থে এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।
জন্ম ১৯৬৭ সালে, গুয়াহাটিতে। ছোটবেলা কেটেছে ছোট্ট সুন্দর রেলশহর লামডিং-এর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। পেশা শিক্ষকতা, নেশা বাংলা ও অসমিয়া কথাসাহিত্য। গুয়াহাটির প্রাগজ্যোতিষ কলেজে প্রতিষ্ঠিত ‘লিটল ম্যাগাজিন ষ্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’-এর সঞ্চালক। ‘বনফুল’ নামে একটি অনুগল্প পত্রইকা সম্পাদনা করেন কিছুদিন। রাজকুমার মুখোপাধ্যায় সম্পাদিক ‘ভারতজোড়া কথনকথা’ এবং অন্যান্য গ্রস্থে তাঁর অনুদিত অসমিয়া গল্প সংকলিত হয়েছে। সম্প্রতি সাহিত্য আকাদেমি প্রকাশিত ‘লক্ষীনাথ বেজবরুয়ার নির্বাচিত রচনা’ সন্নিবিষ্ট বেজবরুয়ার ‘পদুম কুঁজরী’ উপন্যাসটির বঙ্গানুবাদ তিনি করেছেন। অসম বঙ্গের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় গবেষণাধর্মী নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।