তুচ্ছজনের আত্মপ্রলাপ
- সুধীন্দ্র দেবনাথ
পুববংলার একটি পাড়াগাঁয়ের নিম্ন শিক্ষার পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে, দেশভাগের পরিণামে ছিন্নমূল সর্বস্বান্ত একটি পরিবার থেকে উঠে এসে ক্লাশ কীভাবে লেখক তার জীবনটা গাড়। তুললেন, সেই কথাটাই তিনি শোনাতে চেয়েছেন তার একান্ত আপনজনক বিশেষ করে তার আখীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব সহকর্মী আর ছাত্রছাত্রীদের। আশি বহারের জীবনকে লেখক কুড়ি-চল্লিশ-কুড়ি এই তিনটি ভাগে ভাগ করে প্রথম পর্বের জীবন-সংগ্রাম, দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষক-জীবন আর তৃতীয় পর্বের অবসর-জীবনের কথা বলেছেন। এতে রয়েছে মুলত তার শিক্ষকদের কথা, ছাত্রদের কথা আর সহকর্মীদের কথা। আর আছে সেইসব চিকিৎসকের কথা, কৃতজ্ঞচিত্তে তিনি যাদের স্মরণ করেছেন জীবনের মধ্যবর্তী পর্যায়ে মারণ-ব্যাধির আক্রমণ থেকে তারা লেখককে বেঁচে উঠাতে সাহায্য করেছিলেন বলে। দেনাপাওনার হিসেব করতে গিয়ে জীবনের কাছে পাওয়া নানারকমের বঞ্চনার পরেও, সমাজের কাছে অপরিশোধ্য ঋণের কথাটা লেখক নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিয়েছেন।
জন্ম ময়মনসিংহ জেলার জমিদার-খ্যাত শহর মুক্তাগাছার কাছাকাছি মাধববাড়ি গ্রামে, ১৯৩৭-এর ৫-জানুয়ারি। প্রথম বিভাগে স্কুল-ফাইনাল আর আই এস-সি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতসহ বাংলাসাহিত্যে সাম্মানিক স্নাতক আর এম.এ., বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ.ডি.। ছ-বছর বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে, চৌত্রিশ বছর প্রেসিডেন্সি-হুগলি মহসিন-কৃষ্ণনগর কলেজসহ ছ-টি সরকারি কলেজে শিক্ষক। ২০০৩-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘বিশিষ্ট শিক্ষক সম্মান’। ১৯৬৫-তে ড. শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর শতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থে’-র ‘সুন্দরের ত্রি-বেদী’ নামের লেখাটি থেকে প্রাবন্ধিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। কোরক চতুষ্কোণ এবং অন্যান্য পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি। বাংলা বানান ছন্দ অলংকার আর মধুসূদন দত্তের কাব্য-কবিতা নিয়ে সাতটি বই।