আখ্যান ব্যাখ্যান ও গদ্যচর্চা
- সম্রাট দত্ত
বিষয় ও আঙ্গিকের নিরিখে বাংলা আখ্যানের বৈচিত্র্য অপরিমেয়। বাংলা আখ্যানকারের তালিকাও সুদীর্ঘ। এই বিপুল সম্ভার থেকে ছ’টি বাংলা আখ্যানের শৈলী পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে ছ’টি প্রবন্ধে। দুটি প্রবন্ধে টুনটুনির গল্প আর টেনিদার আখ্যানমালার শৈল্পিক গুরুত্ব অনুধাবনের প্রয়াস রয়েছে।। আরব্য রজনী নিয়ে রয়েছে একটি প্রবন্ধ। কোনো নির্দিষ্ট তত্ত্বের প্রেক্ষিতে আখ্যানের আলোচনা করা হয়নি। নির্দিষ্ট আখ্যানের শৈলী বিচারে তার প্রাতিস্বিকতা গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া বাংলা গদ্য নিয়ে রয়েছে তিনটি আলোচনা। মোট বারোটি প্রবন্ধে। মননশীল পাঠক চিন্তার খোরাক খুঁজে পাবেন বলেই মনে হয়। বিমূর্ত তত্ত্ব নয়, নির্বাচিত আখ্যানের শৈলীগত প্রাতিস্বিকতা আলোচিত হয়েছেএই বইতে। রয়েছে চতুরঙ্গ, বেণের মেয়ে, বাড়ি থেকে পালিয়ে, জাগরী, ক্রান্তিকাল—এর নিবিড় পর্যবেক্ষণ; জাগরী ও রাত ভরে বৃষ্টি-র বিপ্রতীপতার আলোচনা; আরব্য রজনীর সংরূপ ও চরিত্রায়ণের বিশ্লেষণ। টুনটুনির গল্প আর টেনিদার আখ্যানমালাও বিবেচিত হয়েছে। এছাড়া বাংলা সাহিত্যিক গদ্যের উন্মেষ ও সাময়িকপত্র, প্রমথ চৌধুরী ও সবুজ পত্র এবং বুদ্ধদেব বসুর রবীন্দ্র-উপন্যাস মূল্যায়ন সম্পর্কে তিনটি মননশীল প্রবন্ধ রয়েছে।
সত্তরের দশকে কলকাতায় জন্ম। আখ্যানতত্ত্ব ও নানা ধরনের আখ্যানের শৈলী অনুধাবনে আগ্রহী। কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে পড়ার পর রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম, রহড়া থেকে মাধ্যমিক ১৯৯০। রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক মহাবিদ্যালয়, নরেন্দ্রপুর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (১৯৯২), দুটিতেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ। জাতীয় মেধা বৃত্তি প্রাপক (১৯৯০)।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় সাম্মানিক স্নাতক (১৯৯৬) ও স্নাতকোত্তর (১৯৯৮)। দুটিতেই প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ। এখান থেকেই বিশ শতকের পাশ্চাত্য আখ্যানতত্ত্ব ও উপন্যাসের তত্ত্ব নিয়ে পি.এইচ.ডি. (২০০৭)।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর সান্ধ্য বিভাগের অংশগালীন শিক্ষক (অগাস্ট ২০০১ – জুন ২০০৫)। এশিয়াটিক সোসাইটির অভিধান প্রকল্পের প্রাক্তন রিসার্চ ফেলো (১৯.১১.২০০১ – ২১.০৮.২০০৬)। গৌরমোহন শচীন মণ্ডল মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক। বর্তমানে আশুতোষ কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
বিভিন্ন ছোট পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত বই : বিশ শতকের আখ্যানতত্ত্বের প্রেক্ষিতে বাংলা উপন্যাস।