বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস পুনর্বীক্ষণ
- মৃণালকান্তি মণ্ডল
বঙ্কিমচন্দ্র প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “বন্ধিম বঙ্গভাষার ক্ষমতা এবং বঙ্গসাহিত্যের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করিয়া দিয়াছেন, তিনি ভগীরথের ন্যায় সাধনা করিয়া বঙ্গসাহিত্যে ভাবমন্দাকিনীর অবতারণ করিয়াছেন এবং সেই পুণ্যআোতস্পর্শে জড়ত্বশাপ মোচন করিয়া আমাদের প্রাচীন ভস্মরাশিকে সঞ্জীবিত করিয়া তুলিয়াছেন। ইহা কেবল সাময়িক মত নহে, এ কথা তর্ক বা রুচির উপর নির্ভর করিতেছে না, ইহা একটি এঁতিহাসিক সত্য”। বন্কিম-প্রতিভার স্পর্শে বাংলা সাহিত্যে প্রভাতের সূর্যোদয় বিকশিত হয়েছিল। তিনি কেবল বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ ওপন্যাসিক নন, আধুনিক ভারতীয় ভাষার উপন্যাস সৃষ্টি ও বিকাশেও তাঁর প্রভাব স্মরণীয় । উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলনে যে নূতন চেতনা দিয়ে তাকে রূপ দিতে চেয়েছিলেন । একই সঙ্গে নূতন পথের দিশা দেখাতে চেয়েছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র যখন বাংলা উপন্যাস রচনায় হাত দেন, তখন তার সামনে কোনো মডেল ছিল না। তবে দেশি-বিদেশি সাহিত্যের সঙ্গে তার নিবিড় পরিচয় ছিল। তিনিই প্রথম কাহিনিকে আখ্যানে এনে দিলেন। শুরু হল ভারতীয় ভাষায় নভেলের জয়যাত্রা । বন্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস সৃষ্টি থেকে আজ দেড়শো বছর অতিক্রান্ত। সময়ের প্রবাহে অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনিবার্য, অমোঘ সেই পরিবর্তন উপন্যাসের বিষয় এবং শিল্পরূপেও কত না রূপাসন্তর। আজ এই একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের পাঠক আজ কীভাবে পড়ছেন বন্কিমকে। “বন্কিমচন্দ্রের উপন্যাস : পুনবীক্ষণ' এই সংকলন গ্রন্থে কয়েকজন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও সমালোচক বন্কিমচন্দ্রের উপন্যাসকে নূতন ভাবে পাঠ ও আলোচনা করেছেন। তার সাহিত্যপ্রতিভার শ্রেষ্ঠত্বকে যাচাই করে দেখতে চাওয়া হয়েছে এই গ্রন্থে গ্রন্থটের সম্পাদক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মৃণালকান্তি মণ্ডল।