বিশ শতকের বাংলা উপন্যাসে নারী পরিসর
- স্বপ্না নাথ
এদেশে তথাকথিত নবজাগরণ ঘটে উনিশ শতকে, যে নবজাগরণের অন্যতম লক্ষণ ছিল নারী স্বাধীনতা। পরবর্তী একশো বছরেও সম্পূর্ণ সফল হয়নি সে অধিকার অর্জনের চরম মাত্রা স্পর্শের প্রয়াস। শিল্পে-সাহিত্যে, নারীর দ্বিতীয় লিঙ্গ হয়ে থাকার বাস্তব যন্ত্রণা বরাবরই মরমশিল্পী-সাহিত্যিকের উপজীব্য হয়ে উঠেছে। আবার কখনো নারীর উত্তরণের স্বপ্ন-কল্পনা ডানা মেলেছে সাহিত্যিকদের কলমে। বিশ শতকের বিস্তৃত পরিসরে বাংলা উপন্যাসে কিভাবে পেয়েছি আমরা নারীর কথা, নারীকথা—তা নিয়েই ঋদ্ধ মননশীল গবেষণা সুসম্পন্ন করেছেন অধ্যাপিকা স্বপ্না নাথ। সভ্যতার আদিপর্বে যেদিন সামাজিক উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে নারী বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, সেই ছিল স্ত্রী জাতির ঐতিহাসিক পরাজয়ের মুহূর্ত। ইতিহাসে কত পর্ব-পর্বান্তর হলো, দিন দিন পিতৃতন্ত্র শক্তি অর্জন করে অচলায়তন হয়ে উঠল। আধুনিক যুগ পেরিয়ে আধুনিকোত্তর কালে পৌছেছে মানবজাতি। কিন্তু মানবীর শৃঙ্খলমোচন হলো না। লিঙ্গ-সাম্য, লিঙ্গ-ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াই থামেনি যদিও জটিলতর হয়েছে কেবল দৃশ্য ও অদৃশ্য শেকলের ছায়া। নারীচেতনাবাদী পাঠ-পাঠান্তরে বিরাম নেই তাই। এই কাতারে রয়েছেন অক্লান্ত গবেষিকা ড: স্বপ্না নাথ। নারীর নিজস্ব জগৎ নির্মাণের অধ্যবসায়ে এই বইটি নিবেদিত হচ্ছে আন্তরিক ব্রত যাত্রার অঙ্গীকার হিসেবে। আর এই যাত্রায় তার অবলম্বন সাধন চট্টোপাধ্যায়, ভগীরথ মিশ্র, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, বাণী বসু, তসলিমা নাসরিনের মতো সদ্যবিলীন শতকের অন্তিম পর্বের কথাকার। —তপোধীর ভট্টাচার্য।
ড: স্বপ্না নাথ ডি.এইচ.এস.কে. কমার্স কলেজের অধ্যাপিকা। জন্ম অসমের হাইলাকান্দি জেলায় ১৯৭৪ সালে। আসাম। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম.এ. এবং পি.এইচ.ডি. ডিগ্রী লাভ। অসমীয়া, বাংলা তথা ইংরাজী ভাষার প্রাবন্ধিক। মেয়েদের রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনযাত্রার মান ও তাদের নিজস্ব পরিসর সন্ধান তার গবেষণার ক্ষেত্র। নারী পুরুষ মিলিত সুস্থ সমাজে এক সামগ্রিক যুক্তিবাদী লিঙ্গ ন্যার-এ বিশ্বাসী লেখিকা।