কবি বিনোদিনী এবং
- অপর্ণা রায়
বিনোদিনী কবিতাও লিখতেন। তিনি নাটক করেছিলেন মাত্র বারো বছর, কিন্তু সাহিত্যচর্চা করেছিলেন প্রায় চল্লিশ বছরের উপর। ‘নটী’ পরিচয়ের অনুষঙ্গ শেষ পর্যন্ত বিনোদিনীকে কতটা সম্মানিত না অসম্মানিত করে, তা কিন্তু ভেবে দেখা দরকার। নাম-প্রবন্ধ ‘কবি বিনোদিনী’ সেই কথাই বলে। এরপর সাহিত্য ও ইতিহাসের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্যানভাসে উঠে এসেছে রাসসুন্দরীর ‘আমার জীবন’ থেকে শর্মিলা বসু দত্তের নিঃসঙ্গতার জার্নাল পর্যন্ত দুশ বছর ধরে ছড়ানো মেয়েলি জীবন-যাপন, আলোচিত হয়েছে। ঠাকুরবাড়ির উজ্জ্বল বলয়ের ওপারে দাঁড়ানো বিস্মৃতপ্রায় মেয়েদের কবিতাভূবন, এসেছে গদ্যশিল্পী নীরেন্দ্রনাথের ‘গাঢ় মাতৃভাষার জগৎ’, রবীন্দ্রনাথের ‘মহুয়া’ কল্পনা কাব্যে নারীর মতো নানা বিচিত্র স্বাদের প্রবন্ধ। আবার, সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল’ আর ‘খাই-খাই’ থেকে সত্যজিৎ রায়ের গুপী-বাঘার ট্রিলজি নিয়ে অন্যরকম কিছু চিন্তার সূত্র মেলে এখানে। সব মিলিয়ে স্বচ্ছ ভাবনা ও অনায়াস ভাষার। তুলিটানে আঁকা এই বই যেন এক আশ্চর্য কোলাজ।
জন্ম : শ্রাবণ মাস, ১৩৭৪। বড় হয়ে ওঠা হুগলীর শ্রীরামপুর শহরে। প্রেসিডেন্সী কলেজের কৃতী ছাত্রী। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশুনোয় কৃতিত্বের জন্য পেয়েছেন তারকনাথ সেন স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মারক পুরস্কার এবং বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক পুরস্কার।
গবেষণা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিষয় - প্রাগাধুনিক সাহিত্য ভাবনার প্রেক্ষিতে উনিশ শতকীয় প্রগতি’র শিকড় সন্ধান। অধ্যাপনা-জীবন শুরু শ্রীরামপুর কলেজে। বর্তমানে বাংলা বিভাগ, ভাষাভবন, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক।
বিশেষ আগ্রহ - অমুদ্রিত ও মুদ্রিত উপকরণসূত্রে বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে নারীর ভূমিকা অনুসন্ধান।। নানা পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ - ‘আঠোরে নিয়ে উনিশে-উনিশ শতকীয় সাহিত্যের শিকড় সন্ধান’, ‘পুরাতনী নারী-ধর্ম সমাজ ও সাহিত্য।
প্রিয় শখ – আকাশ দেখা ও গাছেদের যত্ন করা।
এখন ঠিকানা – সোনাঝুরিপল্লি, শান্তিনিকেতন।