কথাপরিসর বাংলাদেশ
- তপোধীর ভট্টাচার্য
খ্রিস্টীয় অষ্টম শতক থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে বহমান বাঙালির সংস্কৃতি ও সাহিত্য অবিভাজ্য চেতনারই অভিব্যক্তি। রাষ্ট্র বিপ্লবে অখণ্ড-বঙ্গভূমির মানচিত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। রুচি ও অবস্থান পাল্টে গেছে; ৰ্জীবনের তাৎপর্য কেবলই পুনরাবিষ্কৃত হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় হিন্দু-ব্রাহ্ম-ইসলাম ধর্মের অবদান যেমন অনস্বীকার্য, তেমনি বিভিন্ন লোকায়ত পরিসরের অবদানও কম নয়। দেশভাগের পরে বাংলা ও বাঙলির অবস্থান আমুল পরিবর্তিত হলেও কবিতায় ও কথাসাহিত্যে অব্যাহত থেকেছে সৃষ্টি ও নির্মাণের যুগলবন্দি। মুক্তিযুদ্ধের পরিণামে পূর্ব পাকিস্তানের পাঁজর থেকে যখন জন্ম নিল বাংলাদেশ, অন্তর্বস্তু ও প্রকরণের বিনির্মাণ অব্যাহত রইল। বাংলাদেশের কথাপরিসর বিশ্লেষণ করে অনবদ্য কিছু বয়ান রচনা করেছেন এ সময়ের যশস্বী সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।