কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গল জীবন বীক্ষার আলোকে
- মুনমুন গঙ্গোপাধ্যায়
চৈতন্য উত্তর কালের মঙ্গল কাব্য গুলির মধ্যে কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গল নানা কারণে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য চৈতন্য পূর্ব যুগের কবি বিজয় গুপ্তের পদ্মপুরাণ এর মত এই কাব্যটির ও নিবিড় বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে বিজয় গুপ্ত এবং ক্ষেমানন্দের নাম উল্লেখ এর কারণ হলো এদের মধ্যে প্রথম জন পূর্ববঙ্গ এবং দ্বিতীয় জন পশ্চিমবঙ্গের কবি দুজনের আবির্ভাব ও কাব্য রচনা কাল এর মধ্যে আছে বেশ বড় রকমের সময়ের ব্যবধান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক প্রভৃতি নানা অবস্থান পরিবর্তন ঘটে পরিবর্তন ঘটে মানসিক অবস্থারও ক্ষেমানন্দের কাব্যে এই পরিবর্তিত যুগ এবং সময়ের চিত্র আছে একথা ঠিক যে মঙ্গলকাব্যের গতানুগতিক আখানে মৌলিকতা সৃষ্টির অবকাশ কম তবুও চরিত্র-চিত্রন তথা চরিত্রের মনস্তাত্ত্বিক রূপ চিত্রণে কবিরা অনেক সময় মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় রেখেছেন তা বিশেষভাবে উপলব্ধ হয় মনসা মঙ্গলের দুটি কেন্দ্র আছে প্রথম এবং দ্বিতীয় তো বেহুলা লক্ষিন্দরের কাহিনী করুন আবেদন দুটি ক্ষেত্রেই সে যুগের সামাজিক ও আর্থসামাজিক পটভূমিতে ঘটনা এবং চরিত্র কত সমস্যা ও সংকট মুক্তি জীবন যাপন চিত্রিত করেছেন তৎকালীন যুগ ও ইতিহাসের প্রতি ছবি হিসেবে কাব্যটির মূল্য মূল্য অনিস্বীকার্য বর্তমানে গ্রন্থের তার প্রতিটি বিষয় আলোচিত হয়েছে সেই সঙ্গে আছে অন্য মঙ্গল কাব্যের সঙ্গে বিশেষত বিজয় গুপ্তের পদ্মপুরাণ তুলনামূলক আলোচনা ও যার দ্বারা ক্ষেমানন্দের কাব্যের স্বাতন্ত্র্য অভিনবত্ব ও মৌলিকতা স্পষ্ট হয়েছে তাই কবির কাব্য একটি বিশেষ সময়ের হয়েও এই সময়কে অতিক্রম করে গেছে বর্তমান গ্রন্থে কবি প্রতিভার মূল্যায়ন এই বিশেষ দিকগুলো বিশ্লেষিত হয়েছে
ড. মুনমুন গঙ্গোপাধ্যায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর এবং বর্তমান বিভাগীয় প্রধান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা। মধ্যযুগের বাংলাসাহিত্য, নাট্যসাহিত্য ও রবীন্দ্রসাহিত্য তার আগ্রহের জায়গা। বহু পত্র-পত্রিকায় এই বিষয়কেন্দ্রিক তার অনেক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। লেখিকার প্রকাশিত বইগুলি- “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন পরিক্রমা’, ‘প্রাগাধুনিক বাংলা সাহিত্যে নাট্যপ্রসঙ্গ ও নাট্যোপাদান’, ‘কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গল : জীবনবীক্ষার আলোকে’, ‘লোরচন্দ্রাণী ও সতীময়না : পুনর্বিচার’, ‘রবীন্দ্রনাথের মালিনী’ (সম্পাদিত), ‘শুভ জন্মদিন’, ‘নাচে জন্ম নাচে মৃত্যু’, ‘ঠাকুরবাড়ির দুই বধূ : নীপময়ী ও প্রফুল্লময়ী’, ‘অবনীন্দ্রনাথ : স্মৃতিসত্তার উজ্জ্বল উদ্ধার’ (সম্পাদিত)।