নকশাল আন্দোলন
- ফটিক চাঁদ ঘোষ
সত্তর দশককে মুক্তির দশকে পরিণত করতে চেয়েছিলেন নকশাল আন্দোলনের বীর-বিপ্লবীরা। কিন্তু তা হয়ে উঠেছিল মৃত্যুর দশক। এক গভীর ট্রাজেডিতে আপাত সমাপ্ত এই আন্দোলন তবু ভারতবর্ষের - বোধ করি - একমাত্র আন্দোলন - যা সমাজ পরিবর্তন করতে চেয়েছিল, বদলে দিতে চেয়েছিল মৌলিক রীতিনীতি। তারই ইতিহাস ধরা আছে এই বইতে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই আন্দোলনের সামগ্রিক পরিচিতি তুলে ধরার জন্য কোন বাংলা বই লেখা হয়নি আজও। এই রচনাও অসম্পূর্ণ। কারণ তার সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ ইতিহাস রচনা এক দু:সাহসিক কাজ। আগামী দিনে তাতে হাত দেওয়ার স্বপ্ন লেখকের। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু সামগ্রিক ইতিহাস তুলে ধরা হল। আর তার সঙ্গে রইল তারই অভিঘাতে সৃষ্ট এক বিচিত্র কাব্য জগতের পরিচয়। বাংলা সাহিত্যে যা অভিনব সংযোজন। তার প্রভাব আজও কিভাবে বয়ে চলেছে - কী আন্দোলনে কী কাব্যে তারই বিবরণ রইল। তাই এই বই বাংলা সাহিত্যে সমালোচনায় অভিনবত্ব দাবি করতে পারে।
জন্ম ১০ জুন ১৯৭০ পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমান্ত বাংলায়-লাটপাড়া গ্রামে। তপশিয়া, গোপিবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম রাজকলেজ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা। তারপর বিনপুর হাইস্কুল ও মহিষাদল রাজকলেজে শিক্ষকতা। বর্তমানে মেদিনীপুর কলেজের বাংলাবিভাগের বিভাগীয় অধ্যাপক। নকশাল আন্দোলন ও বাংলা কবিতা-র আলোচনা নিয়ে এম. ফিল.। ঐ আন্দোলনের কথাসাহিত্য নিয়ে পি.এইচ.ডি.। প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বারো থেকে সাতাশ বছর বয়স পর্যন্ত। তারপর মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়া। প্রতিষ্ঠিত শাসকগোষ্ঠীর বিরোধিতার পুরস্কার পেয়েছেন সারাজীবন। প্রকাশিত গ্রন্থ ‘নকশাল আন্দোলন ও বাংলা কথাসাহিত্য’, ‘আরোগ্য নিকেতন : একটি নিবিড় পাঠ’, ‘কাব্যগ্রন্থ পেরোতে চাই প্রলাপের কাল’, ছড়ার বই ‘একুশে বাংলার কবিগান’, সম্পাদিত গ্রন্থ : ‘রবির আলোয়’, ‘গিরিশচন্দ্রের জনা', ‘বাদল সরকার এবং’, ‘এবং ইন্দ্রজিত’, জঙ্গলমহলের সাম্প্রতিক আন্দোলনের পরিচয় পর্যালোচনা ‘ইতি ডুলুং : জঙ্গল মহল’। প্রকাশ পেতে চলেছে। ‘দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোকগান : অস্তিত্ব ও সংকট’। অধ্যাপনা ছাড়া বাকি সময়টুকু লেখা এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং জমাট আড্ডা দিয়ে - যে আড্ডারও একমাত্র আলোচ্য মানুষ ও মানুষের অধিকার।