পরশুরামের গল্প : জীবনদৃষ্টি ও শিল্পরূপ
- সঞ্জীব দাস
স্মরণাতীত কাল থেকে ভারতের সাহিত্য ক্ষেত্রে গল্পকথন রীতি অবলম্বিত হয়ে চলেছে। রামায়ণ, মহাভারতের যুগ পেরিয়ে মধ্যযুগে, এমনকী ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষে সামন্ততান্ত্রিক সমাজকাঠামোয় এই কথকতার ধারাটি ছিল প্রবহমান। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে এই কথকতার ধারাটিকে প্রথম প্রতিষ্ঠা দেন ত্রৈলোক্যনাথ। পরশুরামের গল্পে এই ধারাটি অভূতপূর্বব্যাপ্তি পায়। নাতিবৃহৎ এই গ্রন্থে পরশুরামের গল্পবিশ্বে ব্যবহৃত এই বিশিষ্ট শৈলীটির ব্যবহারের দিকটি মুনশিয়ানার সঙ্গে বিশ্লেষিত হয়েছে। সেইসঙ্গে পরশুরামের জীবনদৃষ্টির স্বাতন্ত্র, তাঁর গল্পে ব্রতকথা, রূপকথা, পুরাণের ব্যবহারের দিকটাও আলোচিত হয়েছে। সর্বোপরি পরশুরামের উল্লেখযোগ্য গল্পগুলি (শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড, চিকিৎসা সংকট, ভুশীর মাঠ, লম্বকর্ণ, জাবালি, বিরিঞ্চিবাবা, কচিসংসদ, দক্ষিণরায়, উলটপুরাণ, হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি) আলোচিত ও বিশ্লেষিত হয়েছে। গবেষকের গভীর বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং অনুভূতিশীল পাঠকের রসবোধের সময়ে রচিত এই গ্রন্থ রসিক পাঠকের আস্বাদ্য হবে আশা করা যায়।
লেখক বর্তমানে বীকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক। জন্মস্থান হুগলী জেলার প্রাচীন শহর বৈদ্যবাটী। ১৯৯৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ.। ২০১১ সালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন। এই সমালোচক পেশায় অধ্যাপক হলেও নিজেকে আকাডেমিক বৃত্তের নীরসতায় সীমাবদ্ধ না রেখে সৃষ্টিশীলতায় নিয়ত সক্রিয়। ইতিমধ্যে তার রচিত কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের উপর রচিত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ প্রস্থ কবিতার অলোকরঞ্রন : ভুবনডাঙার বাউল" মননশীল পাঠকের প্রশংসাধন্য হয়েছে।