উৎসারিত আলো : রবীন্দ্রনাথের গান
- শংকর চট্টোপাধ্যায়
রবীন্দ্রসংগীত এক মহাসমুদ্র। সেই সমুদ্রে বালি অবগাহন করছে প্রায় একশো বছর ধরে। তবু তাকে জানা-বোঝা শেষ হয়নি। নানা দিক থেকে নানাভাবে রবীন্দ্রনাথের গানকে বোঝার চেষ্টা চালেছে নিরন্তর। যা একসময় ছিল ‘রবিবাবুর গান’ তা-ই কালক্রমে হায় দাঁড়াল রবীন্দ্রনাথের গান, রবীন্দ্রসংগীত। এই সংগীতের বহু রূপ, বহু অভিমুখ। কেউ তাকে নিতান্তই কাব্যকলার পরাকাষ্ঠা হিসেবে দেখেন, কেউ আবার এ-গানের সুরে মজে থাকতে ভালোবাসেন। এই গ্রন্থের রচয়িতা মনে করেন ‘রবীন্দ্রসংগীতের সুবদ্ধতা তার কথা ও সুরের এক সমন্বিত রূপ’। একথা ভূলে গেলে রবীন্দ্রনাথের গানকে খণ্ডিতভাবে দেখার ভুল ঘটে যাবে। লেখক এই গ্রন্থের একাধিক নিবন্ধে বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের গান শুধু কানে শোনার নয়, যুগপৎ কান, মস্তিস্ক আর হৃদয় দিয়ে তাকে বুঝতে-জানতে হয়। প্রবীণ শিল্পী ও প্রশিক্ষকের এই নিবন্ধগুলিতে রবীন্দ্রসংগীতের অন্তর্লোকে অভিযাত্রা রসজ্ঞ পাঠককে নিশ্চয় উদ্বুদ্ধ করবে।
জন্ম ১৭ মার্চ ১৯৩৪। বাল্যকাল থেকেই গানপ্রেমী। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক। কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর দর্শনেরই শিক্ষক হিসেবে। সংগীতচর্চা সুবিনয় রায়ের শিক্ষকতায়। সংগীতগুরুর সান্নিধ্যেই সংগীতজীবনের পুরোটাই গড়ে উঠেছিল। আচার্যের নানাবিধ সাংগীতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত। পাদপ্রদীপের তীব্র আলোয় আসতে চাননি কখনো। তবু শিল্পী ও শিক্ষক হিসেবে তার যোগ্যতার স্বীকৃতি হিসেবে রাজ্য সংগীত আকাদেমির সদস্যপদ পেয়েছিলেন। তাছাড়া ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীতের স্নাতকোত্তর বিভাগের পরীক্ষক। সাহিত্য ও সংগীত বিষয়ক গ্রন্থাদি পড়ায় তার আগ্রহ অনিঃশেষ। গান গাওয়া, শেখানো, গান শোনা আর গানের বই পড়া তাঁর বার্ধক্যের বারাণসী।