আধুনিক হিন্দি সাহিত্য : গতিপ্রকৃতি
- বিপ্লব চক্রবর্তী
আধুনিক হিন্দি সাহিত্যের গতি ও প্রকৃতি বর্ণনায় প্রতিনিধি স্থানীয় লেখকদের সাহিত্যকৃতির বিশ্লেষণ ছাড়াও আছে তুলনামূলক আলোচনা। হিন্দি ও বাংলা সাহিত্যের প্রতিবেশী সম্পর্কের তাৎপর্য এবং বাংলা ও হিন্দি সাহিত্যের প্রতিবেশী সম্পর্কের ইতিহাস এই গ্রন্থে বিশেষভাবে উন্মোচিত। হিন্দি কথাসাহিত্যের কালপট ও ভাবপ্রেরণার আলোচনাও এই গ্রন্থটিকে স্বাতন্ত্র চিহ্নিত করেছে। গ্রন্থটির প্রথম খণ্ডে আছে আধুনিক হিন্দি কথাসাহিত্যের আলোচনা, দ্বিতীয় খণ্ডে আছে আধুনিক হিন্দি কবিতা ও নাটকের আলোচনা। শুধুমাত্র লেখক ও গ্রন্থ তালিকা দেওয়া গ্রন্থটির উদ্দেশ্য নয়। তাই যুগ-প্রেক্ষাপট, প্রতিনিধি স্থানীয় ও অন্যান্য লেখকদের রচনাগত বৈশিষ্ট্যরও পরিচয় পাওয়া যাবে। বাংলা সাহিত্যর সঙ্গে হিন্দি সাহিত্যর তুলনামূলক আলোচনার ক্ষেত্রে গ্রন্থটি নতুন দিগন্ত সন্ধানী হয়ে উঠেছে। অধ্যাপক চক্রবর্তী একালের তুলনামূলক ভারতীয় সাহিত্য গবেষণার এক অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। তুলনামূলক সাহিত্য গবেষণার ক্ষেত্রে অধ্যাপক চক্রবর্তীর লেখা গ্রন্থগুলি ইতিমধ্যে সূধীজনের প্রশংসা অর্জন করেছে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে : Horizons of the Indian Novel, Style In Bengali Provarbs, Pessimism and Contemporary Bengali Literature, বাংলা নাটক : মারাঠি নাটক, উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্য, লোকাভরণ : আধুনিক কবিতার শৈলী, একালের কবিতা : শৈলীসন্ধান ইত্যাদি। সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় নাটক সংগ্রহ, শৈলীচিন্তাচর্চা, রবীন্দ্রনাথ ও ভারতীয় সাহিত্য ইত্যাদি। ২০০২ সালে জব্বলপুরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের ৭৫তম অমৃতবর্ষে সর্বভারতীয় সাহিত্য শাখার সভাপতির আসন অলংকৃত করেন তিনি। সভাপতির অভিভাষণে তিনি বাংলা, হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় রচিত সাহিত্যের ঐক্যবন্ধনের বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্ৰফেসর ড. বিপ্লব চক্রবর্তী, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক। অতিথি অধ্যাপকরূপে পড়িয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিপুরা ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদেশে থেসালি বিশ্ববিদ্যালয় (গ্রীস) ও কেনিয়াট্টা বিশ্ববিদ্যালয়ে (আফ্রিকা। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭০। ইংরেজিতে রচিত তার গবেষণাপত্র লা পম্পা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (আর্জেন্টিনা), তারতু বিশ্ববিদ্যালয় (এস্তোনিয়া) ও লাহোর বিশ্ববিদ্যালয় (পাকিস্তান) থেকে প্রকাশিত। আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অধ্যাপনা, বক্তৃতাপ্রদান ও আন্তর্জাতিক আলাোচনাচক্রে সভাপতিত্ব করেছেন। মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান মহম্মদ শাহ তাকে পুলরা স্বর্ণপদক প্রদানে সম্মানিত করেছেন (২০১৬)। এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁকে প্রদান করে ড. সুকুমার সেন স্বর্ণপদক (২০১০)। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রৌপ্যপদক দিয়েও তাকে সম্মান জানানো হয়। সৃষ্টিমূলক সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রেও তার (৭টি উপন্যাস, ১টি গল্প সংগ্রহ, ৪টি নাটক ও ১২টি কবিতা সংকলন) অবদান স্মরণযোগ্য।