মধুসূদনের প্রহসন : একেই কি বলে সভ্যতা? বুড় শালিকের ঘাড়ে রোঁ।
- বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য
১৮৬৬ সালে এক বক্তৃতায় মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মধুসূদনের দুটি প্রহসন সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, ‘তাহার প্রহসন দুইখানি আজও অগ্রগণ্য’। এই প্রশস্তি একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকেও এতটুকু মূল্যহীন হয়ে পড়েনি। কারণ মধুসূদন যাতেই হাত দিয়েছেন তাতেই সোনা ফলিয়েছেন। তার সৃষ্টির স্বর্ণসম্ভারের ঔজ্জ্বল্য ও দ্যুতিতে বাংলার সাহিত্যাকাশ আলোকময় হয়ে উঠেছে। এমন এক বিস্ময়কর প্রতিভা যে বারবার সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবেন তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। সুতরাং মধুসূদনকে নিয়ে ভাবনার পরিসর ক্রমশই প্রসারিত হয়েছে। কালে কালে একাধিক সমালোচকের দৃষ্টির দর্পণে মধুসূদন হয়ে উঠেছেন নানা মধুসূদনের একখানি মালা। বর্তমান গ্রন্থটি মধুসূদনের দুটি প্রহসনকে নতুন করে দেখার-ভাবার ও বিশ্লেষণ করার এক আন্তরিক প্রয়াস; যা নিছক চর্বিত-চর্বন নয়। এই লেখার মুখোমুখি হয়ে পাঠক খুঁজে পাবেন এমন এক মধুসূদনকে যিনি এতদিন অনালোচিত ছিলেন। মধুসূদন-সাম্রাজ্যে নতুন করে আলো ফেলে অন্যতর ও ভিন্নতর এক প্রহসনকারকে আবিষ্কারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই লুকিয়ে আছে এই গ্রন্থের বিশেষত্ব।
জন্ম ১৯৩৫ বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল শহরে। শিক্ষাদীক্ষা সমস্তই কলকাতায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক রূপে অবসর নেন। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ এবং বাইরের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও অতিথি অধ্যাপক বা ভিজিটিং অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। প্রধানত, কথাসাহিত্যই তার গবেষণা ও আলোচনার প্রিয় বিষয়। বাংলা রাজনৈতিক বিন্যাসের প্রথম পর্যায় তার উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থ। এছাড়া ‘ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়’ শীর্ষক একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থও রয়েছে। এগুলি ছাড়া ত্রৈলোক্যনাথ ও বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়ের সরস গল্পের সম্পাদনা করেছেন। বাংলা প্রগতি সাহিত্যের একটি সংকলন যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেছেন। বর্তমান গ্রন্থটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত প্রবন্ধের সংকলন।