চেনা অচেনায় মিশে
- দীপঙ্কর ভট্টাচার্য
‘লালগোলাতে এই মুক্তকারা আছে তিরিশ বছর আগে থেকেই। কোনও বন্দি এখানে চায়ের দোকান চালান, কেউ টিউশন করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কারও বসতিও এখানে’। ... ‘লালজি অর্থাৎ প্রকৃতীশের প্রিয় হাতি ছিল প্রতাপ সিং। একবার কোঁকড়াঝাড়ের জঙ্গলে একটা বাঘকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখে প্রতাপ মুহুর্তে সেটাকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মেরে ফেলে’। ... ‘বজবজের গ্রামে এখনও আছেন সালেমন। এখন ৭৭ অতিক্রান্ত, তবু মনে আছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা। তাকে নিয়েই ‘সালেমনের মা’। ... কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতে ধূসর বই। হারানো গল্প এখনও ভারী করে দেয় বাতাস। ... তার মৃত্যুও পেরিয়ে গেল ৯৮ বছর। সমাজ-পুরুষ বদলাল কই? এক শিক্ষিকাকে সালোয়ার কামিজ পরার অধিকার পেতে হয় আদালতের মধ্যস্ততায়। বোঝা যায় একুশ শতকেও ভাল নেই নারী। ... এই বইয়ের লেখাগুলি আসলে দেখা, আরেক রকম দেখা। চেনা জগতের আড়ালে যে অচেনা আলো তারই দিকে তাকানো। কোনো কালানুক্রম নেই সে দেখায়। তাই রেভারেণ্ড কৃষ্ণমোহন থেকে বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, সুনীতি চাটুজ্যে, শঙ্করীপ্রসাদ বসু, অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, অমিতাভ দাশগুপ্ত, শঙ্খ ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক রায়চৌধুরী, ধনীরাম টোটো, দাইমা গুণবালার সঙ্গে আরও অনেকে এসে দাঁড়াবেন লেখকের দৃষ্টিপথে। টুকরো লেখাগুলি পাঠককে দাঁড় করিয়ে দেয় এক দ্যুতিময় গদ্যের মুখোমুখি।
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য (১৯৬৭), নানা পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখক। টাকি সরকারি কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজের পর বর্তমানে কোচবিহার এ.বি.এন. শীল কলেজে বাংলার শিক্ষক। ‘কথাশিল্পী সরোজকুমার’, ‘দিনময়ী, সারদাসুন্দরী : কিছু বুজে যাওয়া স্বর’, ‘সালেমন, কবিরণ : বজবজে সুভাষ মুখোপাধ্যায়’, ‘চারুলতার চিঠি’ প্রভৃতি বইয়ের লেখক।