জীবনানন্দের কাব্যে পাশ্চাত্য প্রভাব
- কৃষ্ণগোপাল রায়
আধুনিক ও স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত প্ৰকাশকলায় অবক্ষয়ক্লিষ্ট সমকাল—তারই সংশ্লেষে জীবন ও সভ্যতার গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ এবং আপনাপন অভীপ্সাকে কবিতা করে তুলতে তিরিশের যে আদিম দেবতারা সাহসী হয়েছিলেন, জীবনানন্দ তাঁদেরই অগ্রণী একজন। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র, ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, ইংরেজি ভাষা-মাধ্যমে অপরাপর পাশ্চাত্য সাহিত্যে তিনি নিত্য পরিব্রাজক। স্বভাবতই তার কাব্য-কবিতায় রয়ে গেছে ইংরেজি তথা পাশ্চাত্যের অবদান। এই গ্রন্থ সেইসব অবদান পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে চিনে নেবার আভিপ্রায়িক। জীবনানন্দের নির্মাণে সে-সব পাশ্চাত্য অবদান কিভাবে অন্তস্ক্রিয় হয়েছে, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সে অণ্বেষায়ও, নিছক তুলনামূলক আলোচনায় প্রক্ষিপ্ত না হয়ে বরং সনাক্ত করা হয়েছে সম্ভাবনাগুলিকেও, যা আগামীকালের কাছে বাড়িয়ে তুলেছে এ গ্রন্থের উপযোগিতা। বস্তুত জীবনানন্দ-পাঠে এ গ্রন্থ আবশ্যিক সংযোজন।
সাহিত্য সমালোচনা ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ ড. কৃষ্ণগোপাল রায় সুপরিচিত নাম। দেশে-বিদেশে অসংখ্য তাঁর গুণমুগ্ধ পাঠক। অধ্যাপনার যশস্বী, মননে নিবিড়, আর লেখার ক্ষেত্রে যেমন বিশ্লেষণী তেমনই শুদ্ধতাবাণী। প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলে তাদেরই নিরাকরণ করতে করতে তিনি পৌছান সিদ্ধান্তে।
‘রবীন্দ্র-কথাসাহিত্য :আপেক্ষিত প্রসঙ্গ’, ‘সাম্প্রদায়িকতা ও রবীন্দ্রনাথ’, ‘জীবনানন্দের কাব্যে পাশ্চাত্য প্রভাব’, ‘ইংরেজি সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র’, ‘জীবনানন্দের কবিতা পাঠ’, ইত্যাদি তাঁর বহু গ্রন্থের তালিকায় এ গ্রন্থটি অবশ্যই এক উজ্জ্বল সংযোজন।