কবিতা : নন্দন ও সময়
- তপোধীর ভট্টাচার্য
মানুষের সমস্ত শিল্পই সময়-শাসিত। সময়ের স্বর যেমন বদলায় অভিব্যক্তির ধরনও নিশ্চিতভাবে বদলে যেতে থাকে। বাস্তব ও কল্পনার যুগলবন্দিতে সময়ের ভাষা যত রূপান্তরিত হয়, কবিতার শিল্পভাষায় তত মাত্রান্তর ঘটে। নান্দনিক বোধ তাই এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে নিরন্তর নতুনভাবে প্রতিফলিত হয়। সেই প্রতিফলনের পরিগ্রহণ গ্রহীতার অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। বাংলা কবিতার চারণভূমি যেহেতু নানা অঞ্চলে সম্প্রসারিত, পাঠকবর্গের উপলব্ধিও বহুমাত্রিক, স্থির ও বহমান সময়ের মধ্যে সেতু রচনা করতে গিয়ে কবিতা আপন প্রকরণ ও অন্তর্বস্তু কতভাবে বিনির্মাণ করছে, তারই বিশ্লেষণী পাঠ সংকলিত হলো এই বইতে। সময় সময়শীলিত শব্দ ও নৈঃশব্দ্যের দ্বিরালাপে অনির্বচনীয় নান্দনিক আলো কীভাবে জ্বলে ওঠে, তারই হদিশ পেশ করেছেন এসময়ের অগ্রণী সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।