অবসান, অবিরাম, পদধ্বনি ও অন্যান্য
- তপোধীর ভট্টাচার্য
মৃত্যু মানে কি সম্পূর্ণ অবসান? জীবন মানে কি অমোঘ সমাপ্তির জন্য নিরন্তর প্রস্তুতি? প্রাচ্যে ও প্রতীচ্যে এই জিজ্ঞাসার রহস্যকথা ব্যক্ত হতে দেখি দর্শনে, সাহিত্যে, প্রত্নকথায়। কোথাও কি নেই দ্বিবাচনিকতার আশ্রয়ভূমি। মৃত্যু যদি প্রতি মুহুর্তের গন্তব্য, হননে, আত্মহননে তার। এত জটিল প্রকাশ কেন ? প্রশ্ন যত, প্রত্যুত্তর তত নেই। কবিতায় আখ্যানে-চিত্রশিল্পে অমোঘ দণ্ডার ছায়া কীভাবে ব্যক্ত হয়, প্রাচ্যে ও প্রতীচ্যে কোথায় তার শেষ সীমা দেখা যায়নি। আজও প্রত্যক্ষ অভিব্যক্তির চেয়ে। পরোক্ষ প্রকাশের সূক্ষাতিসূক্ষ্ম উপস্থিতি কি অনেক বেশি? মীমাংসাহীন এইসব জিজ্ঞাসার মন্থনে রচিত কিছু প্রবন্ধের সমাবেশ হিসেবে পাঠকের কাছে উপস্থাপিত হচ্ছে এই বই।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।