ভারতীয় নন্দনচিন্তা
- তপোধীর ভট্টাচার্য
বৈদিক আর্যদের সৃজণী উদ্যমে ভারতীয় নন্দনচিন্তার সূত্রপাত হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের শেষদিকে ভরতের নাট্যশাস্ত্রে তার প্রণালীবদ্ধ অভিব্যক্তি প্রথম লক্ষ্যগোচর হলো। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের পরম্পরায় নান্দনিক বোধের বিকাশ কীভাবে ঘটল, এই বইতে সাহিত্যতত্ত্ববিদ অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য বিপুল পরিশ্রমে তা উন্মোচন করেছেন। ভামহ, দণ্ডী, বামন, আনন্দবর্ধন, কুন্তক, ভোজ, বিশ্বনাথ প্রমুখ তত্ত্বগুরুদের সন্দর্ভ ধারাবাহিকভাবে বিশ্লেষণ করে তিনি ভারতীয় নন্দনচিন্তার বিবর্তন স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। মুলত সংস্কৃত সাহিত্য মন্থন করে লেখক তাঁর প্রতিবেদন রচনা করেছেন যদিও নন্দনের বহুমাত্রিক অভিভব কীভাবে আধুনিক কাল-পর্বেও ব্যক্ত হয়েছে এসম্পর্কে তিনি সচেতন। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক নন্দনচিন্তার পরিসরে ভারতীয় তত্ত্বগুরুদের সম্ভাব্য প্রাসঙ্গিকতার প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন লেখক।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।