বিভূতিভূষণ : পুনঃপাঠ
- তপোধীর ভট্টাচার্য
কেউ তাকে ভেবেছেন পথের কবি, কেউ বা একলা পথিক। কারও কাছে তার অবস্থান আধুনিকতা পেরিয়ে চেতনার চিরায়তনে, আবার কারও কাছে তিনি বারবার অজস্র পিছুটানে বিধুর। তবু সমস্ত মিলিয়ে, এখনও অপ্রতিরোধ্য তার। আকর্ষণ। তিনি, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনন্য শিল্পী। জীবনের অফুরান সম্ভাবনা আবিষ্কারে তার মায়াবী দৃষ্টি যায় এমন কী মৃত্যু পেরিয়ে। নিসর্গের মধ্যে সেই অনির্বাণ আলো দেখেন তিনি যা কান্তিমান। ঐ আলোই বুঝি দীপ্যমান থাকে। মাটি-সংলগ্ন আপাত-নগন্য মানুষ-মানুষীর সম্পর্কে। পুন:পাঠের পরম্পরা অব্যাহত রেখেই কেবল নতুন ভাবে বুঝতে পারি বিভূতিভূষণকে। এই বইতে উপস্থাপিত হলো প্রবীণ-নবীনের আন্তরিক চিন্তা মন্থনের দৃষ্টান্ত। পড়ুয়ারা এদের মধ্যে নতুন তাৎপর্যের ইশারা খুঁজে পাবেন।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।