জীবনানন্দ দাস নির্বাচিত কবিতা
- তপোধীর ভট্টাচার্য
শতবর্ষ পেরিয়েও তিনি আরও দুদশক ধরে দীর্ঘ দীর্ঘতর পদক্ষেপে আমাদের সঙ্গে হেটে চলেছেন। অনাসব পদাতিকেরা যখন সমকালের স্তুতি-নিন্দা প্রচার-প্শ্রয় হই-হুল্লোড ইত্যাদির আড়ালে ছায়াবৃত হয়ে গেছেন নয়তো কিছুদূর হেঁটে এসে দূর দিগান্তের ধূসরতায় মিলিয়ে যাচ্ছেন, জীবনানন্দ কখনও সতেজ, সপ্রাণ। কিংবা তারও চেয়ে ঢের বেশি। যতই পড়ছি তার কবিতা, ততই নতুন তাৎপর্য খুঁজে নিতে পারছি। সাধারণ পড়ুয়াদের সুখ-দুঃখ ্রাপ্তি-অপ্রান্তি স্প্ন-বিষাদ আকাঙ্ফা-সম্ভাবনার প্রতিনিধিত্ব করার মতো ভাষা তিনি যোগান দিতে পারছেন। তিনি, আলো হয়ে, উত্তাপ হয়ে। প্রত্যেক কবিতাপ্রিয় পাঠকেরই আছেন নিজন্ব স্বনির্বাচিত জীবনানন্দ। সুসম্পাদিত সমগ্র কবিতা পারগুলিপির কবিতা এবং প্রসিদ্ধ শ্রেষ্ঠ কবিতার কাতারে দাঁড়াতে চাইছে এই “নির্বাচিত কবিতা”। মুলত সেইসব নিয়ত জিজ্ঞাসুদের জনো, জীবনানন্দ সম্পর্কে খাদের আগ্রহ অফুরান, পর্যায়ে পর্যায়ে যে-রষ্টার কবিকৃতির তাৎপর্য বদলে গেছে এমনকী 'অগোচরেই এই বিস্ময়কর সচল থাকে_ বুঝতে চাই কীভাবে সন্তা মন্থন করে জেগে উঠঢ বোধের নিভৃত স্বর । অসংযোগের সর্বব্যাপ্ত সন্ত্রাস ও কৃহকের মধ্যে জীবনানন্দের কাছেই বুঝতে চাই সংযোগের সুশষ্ন ও গভীর সংকেত। আর, এইজন্যেই, আমরা পড়ি নির্বাচিত কবিতা । পাঠ নিই স্থির দিকৃনির্ণয়ের চেতনায়
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।