নারীচেতনা মননে ও সাহিত্যে
- তপোধীর ভট্টাচার্য
যেখানে পীড়ন, সেখানেই প্রতিবাদ। এবং, বিকল্প সন্ধান । আধুনিক সমাজেও ঢেলে সাজাতে চায়। তবু দেশে দেশে নারী চেতনা জেগে উঠেছে। তাই মানবিকী বিদ্যার নানা শাখা-প্রশীখায় নারীর সার্বিক অধিকার সংক্রান্ত বিবিধ জিজ্ঞাসার অভিব্যক্তিতে দেখতে পাচ্ছি আধিপত্যবাদের নিষ্ঠুর বঞ্চনার বিরুদ্ধে মুক্তি-আকাখ্খার প্রতিস্পর্ধা। বিশেষত আধুনিকতার উন্মেষ-পর্বে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনগুলি ভ্রমশ জোরালো হয়ে উঠল। ফলে সাহিত্য-দর্শন-সমাজতন্তব- রাষ্ট্রবিজ্ঞান-ইতিহাস : প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা গেল নারীর নিজস্ব পরিসর সন্ধানের বিচিত্র সব প্রকরণ। সাহিত্যতত্ত্ব ও তার প্রায়োগিক বিকাশের প্রশ্ন নিয়ে বাঙালির মননে ও সৃজনে যে বহুমাত্রিক অভিঘাতের সূচনা হয়েছে, প্রণালীবদ্ধ বিশ্লেষণ উপস্থাপিত হয়েছে এই বইয়ের বিভিন্ন নিবন্ধে । যত তার বিস্তার ঘটবে ততই নারীপরিসর ও নারীমুক্তি সম্পর্কিত সচেতনতা লক্ষ্যাভিমুখী হবে : এই প্রত্যয়ে গতি সঞ্চারের জন্যে বইটি প্রকাশিত হচ্ছে।
এ-সময়ের পুরোধা সাহিত্যিতাত্তিক ও সমালোচক তপোধীর ভট্টাচার্য (জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯) বাংলা সাহিত্যের যশস্বী চিন্তাবিদ। বাঙালির নিজস্ব নন্দনতত্ত্ব হিসেবে উত্তর আধুনিক চেতনার অন্যতম প্রস্তাবক তিনি। এখনও পর্যন্ত তাঁর ১৩৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘তুমি সেই পীড়িত কুসুম’ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। মোট ৩২ টি কবিতা-সংকলন তাঁর রয়েছে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কার্যদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাবান রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করছেন। ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এমেরিটাস অধ্যাপকও। নিরন্তর মনন-চৰ্চা করাই তাঁর জীবনের ব্রত। উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : প্রতীচ্যের সাহিত্যতত্ত্ব, ঐতিহ্যের পুনর্নির্মাণ, আধুনিকতা : পর্ব থেকে পর্বান্তর, বাখতিন তত্ত্ব ও প্রয়োগ, ছোটগল্পের সুলুক-সন্ধান, উপন্যাসের সময়, উপন্যাসের বিনির্মাণ, কবিতার রূপান্তর, কবিতা : নন্দন ও সময় প্রভৃতি।